১৯৯৭ সালের ১৯ মে কক্সবাজার জেলাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হওয়ায় বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। তদানীন্তন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐ এলাকা পরিদর্শনে যান। তিনি মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখে অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েন এবং সকল গৃহহীন পরিবারসমূহকে পুনর্বাসনের তাৎক্ষনিক নির্দেশ দেন। তারই পরিপেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে “আশ্রয়ণ” নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিন (০৩) টি ফেজে আশ্রয়ণ প্রকল্প (৯১৯৭ - ২০০২), আশ্রয়ণ প্রকল্প (ফেইজ – ২) (২০০২ - ২০১০), আশ্রয়ণ – ২ প্রকল্প (২০১০ - ২০১৭) ১৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১,৪০,১২৮টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়, তন্মধ্যে আশ্রয়ণ – ২ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৪,২১৫টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়। বর্ণিত প্রকল্পের সাফল্য ও ধারাবাহিকতায় ২০১০-২০১৭ (সংশোধিত) মেয়াদে ৫০,০০০ গৃহহীন, ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সারাদেশে গ্রামাঞ্চলে ব্যারাক হাউজ এবং বিভাগীয় সদর ও রাজউক, বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন এলাকা, জেলা ও উপজেলা সদর এবং পৌরসভা এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পুনর্বাসিত ভূমিহীন, গৃহহীন, দুর্দশাগ্রস্ত ও ছিন্নমূল পরিবারের স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে ভূমির মালিকানা স্বত্বের দলিল/কবুলিয়ত সম্পাদন, রেজিষ্ট্রি ও নামজারী করে দেয়া হয়। পুনর্বাসিত পরিবার সমূহের জন্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, মসজিদ নির্মাণ, কবর স্থান, পুকুর ও গবাদি পশু প্রতিপালনের জন্য সাধারণ জমির ব্যবস্থা করা হয়। পুনর্বাসিত পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন উৎপাদনমুখী ও আয়বর্ধক কর্মকান্ডের জন্য ব্যবহারিক ও কারিগরী প্রশিক্ষণ দান এবং প্রশিক্ষণ শেষে তাদের মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করা হয়। প্রকল্পগ্রামে বসবাসরত উপকারভোগীদের (যেমন: নাম/স্বামীর নাম, সন্তান সংখ্যা, ঋণ ইত্যাদি) এবং প্রকল্পগ্রামের তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য ডাটাবেইজ প্রণয়ন করা হয়েছে,ডাটাবেইজের ঠিকানা ( http://ashrayandbpmo.gov.bd/ )।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য
আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহীত প্রধান প্রধান কার্যাবলী নিম্নরূপঃ
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পঃ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় আশ্রয়ণ-২ (জুলাই ২০১০-জুন ২০১৭) নামে একটি প্রকল্পের কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পে ঘূর্ণিঝড়, সিডর, আইলা আক্রান্ত এলাকার জন্য পাকা ব্যারাক, অন্যান্য অঞ্চলের জন্য সেমি-পাকা ব্যারাক এবং নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও রীতিনীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিশেষ ডিজাইনের গৃহ নির্মাণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সংক্ষেপে প্রকল্প পরিচিতিঃ
* উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যমাত্রাঃ ৫০ হাজার ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসন।
* মূল ডিপিপি অনুমোদিতঃ ৩১ আগষ্ট, ২০১০।
* সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিতঃ ১৩ আগষ্ট, ২০১৩।
* প্রকল্পের মেয়াদঃ জুলাই ২০১০ - জুন ২০১৭।
* মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ঃ ২২০৪০০.১৯ লক্ষ টাকা।
* অর্থের উৎসঃ বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল।
আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন পদ্ধতি ও বিভিন্ন ধাপসমূহঃ